তোকমা ও ইসবগুলের ভুসি খেলে কি হয় - খালি পেটে ইসবগুলের ভুসি খেলে কি হয়

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা তোকমা ও ইসবগুলের ভুষি খেলে শরীরে কি ধরনের প্রভাব পড়ে, এগুলো খাওয়ার সঠিক নিয়ম কি এবং কোন কোন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিলে এগুলো খেলে উপকার পাওয়া যাবে তা নিয়ে একটি বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনারা অনেকেই শুধু এগুলো হালকা শরবতের সাথে ব্যবহার করেন কিন্তু এগুলো আমাদের শরীরের ভেতরের ভারসাম্য বজায় রাখতে, হজম ঠিক রাখতে, এমনকি ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে।

তোকমা-ও-ইসবগুলের-ভুসি-খাওয়ার-উপকারিতা

আজকের আর্টিকেলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে তোকমা ও ইসবগুলের ভুসি খেলে কি হয় তা সম্পর্কে জানা। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে দেখুন। এতে আপনি বুঝতে পারবেন এই সাধারণ জিনিস আপনার শরীরের কি অসাধারণ উপকারে আসতে পারে।

পেজ সূচিপত্র ঃ তোকমা ও ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা

তোকমা ও ইসবগুলের ভুসি খেলে শরীরে কি ধরনের প্রভাব পরে 

তোকমা ও ইসবগুলের ভুসি দুটোই আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী প্রাকৃতিক উপাদান। এই দুইটা জিনিস আমরা অনেকেই চিনি কিন্তু তোকমা ও ইসবগুলের ভুসি খেলে কি হয় তা আমরা জানিনা। তোকমা শরীর ঠান্ডা রাখতে দারুন কাজ করে, ভেতর থেকে এক ধরনের শীতলতা এনে দেয়। অন্যদিকে ইসবগুলের ভুসি পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এটি আমাদের পেটে জমে থাকা ময়লা সহজে বের করে দিতে সাহায্য করে।

তোকমা ও ইসবগুলের ভুসি খেলে শরীর অনেকটা হালকা লাগে। এরা শরীরে পানি ধরে রাখে এবং জেলির মতো একটা ভাব তৈরি করে পেটের ভিতর যা ক্ষুধা ও কিছুটা কমিয়ে দেয়। যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য এটা সত্যি অনেক কার্যকর। এছাড়া শরীরে অতিরিক্ত গরম ভাব, জ্বালাপোড়া এবং প্রস্রাবের সমস্যা কমাতেও তোকমা ও ইসবগুলের ভুসি অনেক উপকারি।

আরও পড়ুনঃ চুলে অলিভ অয়েল তেলের উপকারিতা - চুলে অলিভ অয়েল তেল ব্যবহারের নিয়ম

তোকমা ও ইসবগুলের ভুসি খাওয়া খুবই সহজ। তবে একসাথে বেশি খেয়ে ফেললে সমস্যা দেখা দিতে পারে। পেটে হালকা গ্যাস হতে পারে। তাই সব সময় পরিমাণ বুঝে খেতে হবে। সাধারণত সকালে খালি পেটে বা রাতে ঘুমানোর আগে হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে খেলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। মোটকথা, তোকমা আর ইসবগুল শরীরের ভেতরের ভারসাম্য রক্ষা করে এবং অনেকভাবে সাহায্য করে।

এই দুইটি একসাথে খাওয়ার নিয়ম ও সময়

তোকমা আর ইসুবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা অনেক, তবে যেভাবে খাচ্ছেন সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে এক চামচ তোকমা দানা ভিজিয়ে রাখলে সেটা ধীরে ধীরে ফুলে উঠে নরম হয়ে যায়। এই অবস্থায় সেটি খাওয়া সহজ হয়। এরপর আলাদা করে এক চামচ ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে দিলে আরো উপকার পাওয়া যায়। চাইলে সামান্য মধু যোগ করে নিতে পারেন। এতে স্বাদ আর পুষ্টিগুণ দুটোই বাড়ে। 

এই মিশ্রণ খাওয়ার সেরা সময় হলো সকালে খালি পেটে অথবা রাতে ঘুমানোর আগে। সকালে খেলে পেট পরিষ্কার থাকে, হজম শক্তি বাড়ে এবং দিনটা শুরু হয় অনেক ভালোভাবে। রাতে খেলে পেট আরাম পায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি মিলে আর ঘুমটাও ভালো হয়। ওজন কমাইতে চাইলে খাওয়ার আধা ঘন্টা আগে খেলে তা ক্ষুধা কিছুটা কমিয়ে দিবে ফলে বেশি খাওয়ার ইচ্ছা কমে যাবে।

তবে সব কিছুরই একটা পরিমাণ থাকে। প্রতিদিন অতিরিক্ত খেলে উল্টা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই শুরুতে এক চামচ করে খাওয়া ভালো। সঙ্গে প্রচুর পানি খেতে হবে না হলে পেট ভারি বা পেটে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। আবার যদি কারো আগে থেকেই ডায়াবেটিস বা কিডনির সমস্যা থাকে তবে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াটা ভালো। নিয়ম মেনে চললে তোকমা ও ইসবগুল শরীরের অনেক উপকারে আসতে পারে।

ইসবগুলের ভুসি কতক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখে খাওয়া ভালো

ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার আগে খুব বেশি সময় ভিজিয়ে রাখার দরকার হয় নেই। সাধারণত এক গ্লাস পানিতে ১ থেকে ২ চামচ ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে মাত্র দুই থেকে পাঁচ মিনিট রেখে দিলেই সেটা ফুলে ওঠে এবং খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। এই সময়ের মধ্যেই এটি একটি হালকা জেলের মতো আকার ধারণ করে যা পেটে গিয়ে সহজে খাবার হজম করতে সহায়তা করে। 

তবে কেউ চাইলে আরো একটু নরম করতে পারে। ১০ মিনিট পর্যন্ত ভিজিয়ে রাখলে সেটি আরো নরম হয়ে যাবে। বিশেষ করে যাদের গ্যাস্ট্রিক বা হজমে বেশি সমস্যা থাকে তারা বেশি নরম করে খেতে পারেন। মনে রাখতে হবে, ইসবগুলের ভুসি পানি শোষণ করে জেলি তৈরি করে তাই এটি খাওয়ার পর প্রচুর পানি পান করা জরুরি না হলে পেট ভারী লাগতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি এটি সকালে খালি পেটে বা রাতে ঘুমানোর আগে খাওয়া যায়। এতে হজম ভালো হয় এবং পেটও পরিষ্কার থাকে। তবে একবারে বেশি খাওয়া যাবেনা, পরিমাণ বুঝে নিয়ম মেনে খেলে ফলাফল পাওয়া যাবে।

তোকমা-ও-ইসবগুলের-ভুসি-খাওয়ার-উপকারিতা

তোকমা দানা কতক্ষণ ভিজিয়ে রেখে খেতে হয়

তোকমা দানা খাওয়ার আগে কিছুটা সময় ভিজিয়ে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত এক গ্লাস পানিতে এক চামচ তকমা দানা দিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে দিলে এগুলো ফেঁপে উঠে এবং একটি জেলির মতো আকার ধারণ করে। এই জেলি তৈরি হওয়ার পরেই এটি খাওয়া সবচেয়ে উপকারী কারণ তখন শরীরের ভেতরে গিয়ে অনেক বেশি কার্যকর ভাবে কাজ শুরু করতে পারে। 

তোকমা শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে তাই গরমের সময় শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য এটি খুব ভালো একটি খাবার হতে পারে। অনেকে ইফতারের সময় বা সকালে খালি পেটে এটি খেয়ে থাকে। বিশেষ করে হজমের সমস্যা বা অতিরিক্ত গরমে ক্লান্তি অনুভব করলে এটি শরীরকে ঠান্ডা করে এবং আরাম দেয়। তবে একে খালি পেটে পানি বা দুধে মিশিয়ে খাওয়া যায় কারো কারো পছন্দ মতো লেবু বা মধু যোগ করলেও কোন সমস্যা নাই।

তবে খাওয়ার আগে যেটা মনে রাখা জরুরি তা হলো ভালোভাবে ভিজেছে কিনা তা দেখে নেওয়া। যদি ঠিকভাবে না বুঝে তবে গলায় আটকে যেতে পারে। তাই নিরাপদ ভাবে খাওয়ার জন্য সময়মতো ভিজিয়ে খাওয়াই ভালো। নিয়মিত খেলে এটি শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, হজম শক্তি বাড়ায় এবং শরীরকে হালকা রাখতে অনেক সাহায্য করে।

ইসবগুলের ভুসির উপকারিতা কি কি   

ইসবগুলের ভুসি আমাদের হজম শক্তি ঠিক রাখতে খুবই সাহায্য করে। বিশেষ করে যারা দীর্ঘদিন  কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন, তাদের জন্য এটি একটি খুব ভালো সমাধান হিসেবে কাজ করে। ইসবগুল পেটে গিয়ে পানি শাসন করে ফুলে ওঠে এবং পেটকে নরম করে দেয়, ফলে মল সহজে বের হতে পারে। নিয়মিত খেলে পেট পরিষ্কার থাকে এবং হজম ভালো হয়। 

এসিডিটি ও পেট জ্বালাপোড়া করা সমস্যাগুলো তেও ইসবগুল বেশ ভালো কাজ করে। ভারী খাবার খাওয়ার পরে অনেকের বুক জ্বালা বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়। ইসবগুল সেই সমস্যার সমাধান করে এবং পেটকে আরাম দেয়। এটি শরীরের অতিরিক্ত গরম লাগা কিছুটা কমিয়ে দেয়। বিশেষ করে গরমকালে যখন শরীর ক্লান্ত ও পানি শূন্যতা দেখা দেয়।

ইসবগুল প্রস্রাবের সমস্যার সমাধান করে। অনেকে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়াবা পাথর সমস্যায় ভোগেন। ইসবগুল শরীর থেকে টক্সিন বা ক্ষতিকর উপাদান বের করে দেয় এবং প্রস্রাব পরিষ্কার রাখে। এছাড়া এটি কিডনির উপরেও চাপ কমায় যেটা লম্বা সময়ের জন্য শরীর ভালো রাখতে অনেক সহায়তা করে। 

ওজন কমাতে যাওয়া অনেকেই ইসবগুল খেয়ে উপকার পেয়েছেন। এটি শরীরে গিয়ে পানি শাসন করে ফুলে ওঠে যার ফলে পেট ভরা থাকে এবং অকারণে খিদে পায় না। যারা ডায়েট করছেন বা ওজন কমাতে চান বা কম খেতে চান তারা খাবারের আগে এটি খেলে খুদা কমে যাবে এবং পেট পরিষ্কার থাকবে। তবে মনে রাখতে হবে ইসবগুল খাওয়ার পর পরিমাণ মতো পানি খাওয়াটা অত্যন্ত জরুরি কারণ ইসবগুল পানি শোষণ করে তাই পরিমাণ মতো পানি খাওয়াটা জরুরী।

তোকমা দনার উপকারিতা কিভাবে আমাদের কাজে আসে

তোকমা দানা শরীর ঠান্ডা রাখতে অসাধারণ ভূমিকা পালন করে। গরমের দিনে শরীর যখন গরম হয়ে যায়, তখন তোকমা দানা দারুণ আরাম দেয়। পানিতে ভিজিয়ে খেলে পেট ঠান্ডা থাকে এবং অস্বস্তি ভাব অনেকটাই কমে যায়। গরমের হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে তোকমা বেশ কাজের। শরীরের ভেতরের গরম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এটি অনেকেই নিয়মিত খান।

তোকমা হজমশক্তি বাড়াতেও ভালো কাজ করে। খাওয়ার পর পেটে ভার লাগা, গ্যাস থাকলে এটি অনেকটাই আরাম দেয়। এটি খাবারের সঙ্গে সহজে মিশে যায় এবং পেটে গিয়ে একধরনের জেলির মতো হয়ে হজমে সহায়তা করে। ফলে পায়খানা সহজে বের হয় ও পেট পরিষ্কার থাকে। অনেকেই তোকমা খাওয়ার পর হালকা অনুভব করে।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে তোকমা হতে পারে একটি ভালো অভ্যাস। এটি পেটে ফুলে উঠে পেট ভরা রাখে। ফলে বারবার খাওয়ার ইচ্ছে কমে যায়, যা ওজন কমাতে সহায়তা করে। আবার এটি খুবই লো- ক্যালোরি হওয়ায় ওজন বাড়ার সুযোগ নেই। সকালে খালি পেটে খেলে আরও ভালো ফল পাওয়া যাবে।

তোকমা দানা শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করতেও সাহায্য করে। এটি পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং কিডনির উপর চাপ কমায়। পাশাপাশি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে, কারণ এটি প্রচুর পানি ধরে রাখতে পারে। নিয়মিত সঠিক নিয়মে খাওয়া হলে ত্বকের উজ্জ্বলতাও বাড়ে। এতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকায় এটি নিরাপদভাবেই খাওয়া যায়।

খালি পেটে তোকমা খেলে কি হয়

সকালে খালি পেটে  তোকমা দানা খাওয়া অনেকের জন্য একটা দারুন অভ্যাস হতে পারে। কারণ এটা পেট ঠান্ডা রাখে এবং সহজে পায়খানা হতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হয়, তারা এটা খেলে অনেক হালকা অনুভব করে। তোকমা শরীরের ভেতর একটা ঠান্ডা ভাব আনে দেয়, ফলে গ্যাস জনিত সমস্যা অনেকটাই কমে যায়। সকালে খালি পেটে খেলে এর প্রভাব আরও ভালোভাবে বোঝা যায়।

অনেকেই জানে না, তোকমা খেলে খিদার পরিমাণ কমে যায়। এটা পেটের ভেতরে জেলির মতো হয়ে যায়, যেটা অনেকক্ষণ পেট ভরা রাখে। ফলে অযথা খাওয়া কমে যায় এবং ধীরে ধীরে ওজন নিয়ন্ত্রণে আসা শুরু করে। যারা বারবার খেতে চায় বা ডায়েট মেনে চলতে চায়, তাদের জন্য এটা একটা দারুণ সহায়ক হতে পারে। আর এতে কোনো ভেজাল নেই, একেবারে প্রকৃতির নিজস্ব উপহার।

খালি পেটে তোকমা খাওয়া শরীর পরিষ্কার করতেও সাহায্য করে। আমাদের শরীরে প্রতিদিন কিছু টক্সিন জমে, যেগুলো সহজে বের হতে চায় না। তোকমা দানা পানি শোষণ করে জেলি তৈরি করে, যেটা পেটের ভেতরের ময়লা পরিষ্কার করে দেয়। এতে করে শরীর হালকা লাগে, ত্বকও অনেকটা পরিষ্কার আর সতেজ দেখা যায়। এমনকি মনটাও ফ্রেশ ফ্রেশ মনে হয়।

তোকমা-ও-ইসবগুলের-ভুসি-খাওয়ার-উপকারিতা

তবে একটা কথা সব সময় মনে রাখা দরকার-তোকমা খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি খাওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি পানি কম পান করা হয়, তাহলে পেটে উল্টো ভারী লাগতে পারে বা অস্বস্তি হতে পারে। তাই প্রথমদিকে অল্প পরিমাণে খেয়ে দেখে তারপর পরিমাণ বাড়ানো ভালো। যারা নিয়মিত খাচ্ছেন, তারা নিজের মতো করে একটা সময় ঠিক করে নিতে পারেন। খালি পেটে খাওয়ার অভ্যাসটা একবার গড়ে উঠলে উপকার আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।

খালি পেটে ইসবগুল খেলে শরীরের কি ঘটে

খালি পেটে ইসবগুলের ভুসি খাওয়া অনেক উপকারি। সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস পানিতে ইসবগুল মিশিয়ে খেলে পেটটা হালকা লাগে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে বা পেট ঠিকমতো পরিষ্কার হয় না তারা এর উপকার বুঝতে পারবেন। এটা পেটে গিয়ে জেলির মতো একটা আবরণ তৈরি করে, যেটা মল নরম করে সহজে বাইরে আসতে সাহায্য করে। দিনটা তখন শুরু হয় ফুরফুরা মুডে। 

শুধু পেট পরিষ্কার করা না ইসবগুল আমাদের শরীরের ভেতরের অনেক  টক্সিনও ধীরে ধীরে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এতে ত্বকও অনেকটা পরিষ্কার লাগে, মুখে ব্রণ কমে যায়, এমনকি শরীরটাও ভেতর থেকে হালকা লাগে। খালি পেটে ইসবগুল খাওয়ার পরে মনটা বেশ ফ্রেশ থাকে। আর সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হচ্ছে এটা খাওয়া একদমই কঠিন কিছু না। একটু পানি আর ইচ্ছা থাকলেই হয়।

তবে একটা ছোট্ট ব্যাপার মনে রাখা খুব দরকার। ইসবগুল খাওয়ার পরে ভালো করে পানি খেতে হবে। পানি কম খেলে পেটে উল্টো অস্বস্তি লাগতে পারে। তাই প্রথমে অল্প করে শুরু করে শরীর বুঝে নিলে ভালো। ধীরে ধীরে এটা রুটিনে পরিণত হলে আপনি নিজেই বুঝবেন, আপনার শরীরের কত উপকার হচ্ছে। সকালে খালি পেটে এমন একটা  জিনিস খেলে দিনটা ভালো যায়।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ইসবগুল কি ভাবে কাজে আসে

ইসবগুল একটি প্রাকৃতিক ভুসি যা আমাদের পাচনতন্ত্রের জন্য খুবই উপকারী। এটি মূলত নামক উদ্ভিদের বীজ থেকে তৈরি হয়। ইসবগুলের ভুষিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যা আমাদের পেটকে নরম করতে সাহায্য করে। এটি শরীরের ভেতরে পানি শোষণ করে এক ধরনের জেলির মতো আবরন তৈরি করে, ফলে মল নরম হয় এবং সহজে বেরিয়ে আসে।

প্রতিদিন ইসবগুল খাওয়ার অভ্যাস করলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে যায়। বিশেষ করে যারা দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য এটি একটি সমাধান হতে পারে। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক বা দুই চা চামচ ইসবগুল মিশিয়ে খেলে এটি দ্রুত কাজ করে। কেউ কেউ রাতে খাবারের পর খাওয়া পছন্দ করেন, কারণ এতে সকালবেলা মলত্যাগ সহজ হয়।

তোকমা-ও-ইসবগুলের-ভুসি-খাওয়ার-উপকারিতা

তবে ইসবগুল খাওয়ার সময় পর্যাপ্ত পানি খাওয়া জরুরি। পানি কম খেলে উল্টো বিপদ হতে পারে। ইসবগুল শুধু কোষ্ঠকাঠিন্যই নয় বরং হজমের অন্যান্য সমস্যাতেও উপকার দিতে পারে। এটি একেবারেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন এবং প্রাকৃতিক। তাই যেকোনো বয়সের মানুষ এটি ব্যবহার করতে পারেন-তবে দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

লেখকের শেষ মন্তব্য

আমি নিজেও আগে তেমন বুঝতাম না তোকমা আর ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার যে এত উপকার। কিন্তু যখন নিয়ম করে খাওয়া শুরু করলাম, তখন সত্যি শরীরে একটা হালকা ভাব টের পেলাম। আগে মাঝে মাঝে কোষ্ঠকাঠিন্য আর গ্যাস্ট্রিক নিয়ে ভুগতাম। এখন সকালে উঠে তোকমা খাই আর রাতে ঘুমানোর আগে ইসবগুল। একটা রুটিন হয়ে গেছে।

পেট পরিষ্কার থাকলে মনটাও অনেক ভালো থাকে। সারাদিন ফ্রেশ লাগে। এমনকি খাওয়ার পর পেট ফুলে যাওয়ার যে সমস্যা ছিল তাও আর হয় না। ওজন নিয়ন্ত্রণে কাজে দিয়েছে। এমন সহজ জিনিস যদি ঘরে থেকে মেলে, তাহলে কেন ওষুধ খেয়ে শরীরের ক্ষতি করব?

তাই আমি মতে, আপনারাও একবার নিয়ম করে খেয়ে দেখুন। প্রথম কয়েকদিন একটু খেয়াল রাখবেন, শরীর কীভাবে সাড়া দিচ্ছে। আর হ্যাঁ যথেষ্ট পানি খাওয়া কিন্তু জরুরি। তারপর দেখবেন-তোকমা আর ইসবগুলে আপনাকেও ভেতর থেকে একটা স্বস্তি এনে দেবে। স্বাস্থ্য ভালো থাকলে তো জীবনটা ভালোভাবে উপভোগ করা যায়। আমার আর্টিকেলটি ভালো লাগলে বেশি বেশি করে শেয়ার করবেন এবং অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দিবেন। আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
3 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
  • khan
    khan ৩০ জুন, ২০২৫ এ ৫:৩৭ PM

    onek shundor information disen vai

  • Floro Pedia
    Floro Pedia ১ জুলাই, ২০২৫ এ ১০:১০ PM

    Good information

  • নামহীন
    নামহীন ২ জুলাই, ২০২৫ এ ৮:১৮ AM

    You have given a very good information. Thank you so much. Keep it up.

মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url