তোকমা ও ইসবগুলের ভুসি খেলে কি হয় - খালি পেটে ইসবগুলের ভুসি খেলে কি হয়
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা তোকমা ও ইসবগুলের ভুষি খেলে শরীরে কি ধরনের প্রভাব পড়ে, এগুলো খাওয়ার সঠিক নিয়ম কি এবং কোন কোন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিলে এগুলো খেলে উপকার পাওয়া যাবে তা নিয়ে একটি বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনারা অনেকেই শুধু এগুলো হালকা শরবতের সাথে ব্যবহার করেন কিন্তু এগুলো আমাদের শরীরের ভেতরের ভারসাম্য বজায় রাখতে, হজম ঠিক রাখতে, এমনকি ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে।
পেজ সূচিপত্র ঃ তোকমা ও ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা
- তোকমা ও ইসবগুলের ভুসি খেলে শরীরে কি ধরনের প্রভাব পরে
- এই দুইটি একসাথে খাওয়ার নিয়ম ও সময়
- ইসবগুলের ভুসি কতক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখে খাওয়া ভালো
- তোকমা দানা কতক্ষণ ভিজিয়ে রেখে খেতে হয়
- ইসবগুলের ভুসির উপকারিতা কি কি
- তোকমা দনার উপকারিতা কিভাবে আমাদের কাজে আসে
- খালি পেটে তোকমা খেলে কি হয়
- খালি পেটে ইসবগুল খেলে শরীরের কি ঘটে
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ইসবগুল কি ভাবে কাজে আসে
- লেখকের শেষ মন্তব্য
তোকমা ও ইসবগুলের ভুসি খেলে শরীরে কি ধরনের প্রভাব পরে
তোকমা ও ইসবগুলের ভুসি দুটোই আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী প্রাকৃতিক উপাদান। এই দুইটা জিনিস আমরা অনেকেই চিনি কিন্তু তোকমা ও ইসবগুলের ভুসি খেলে কি হয় তা আমরা জানিনা। তোকমা শরীর ঠান্ডা রাখতে দারুন কাজ করে, ভেতর থেকে এক ধরনের শীতলতা এনে দেয়। অন্যদিকে ইসবগুলের ভুসি পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এটি আমাদের পেটে জমে থাকা ময়লা সহজে বের করে দিতে সাহায্য করে।
তোকমা ও ইসবগুলের ভুসি খেলে শরীর অনেকটা হালকা লাগে। এরা শরীরে পানি ধরে রাখে এবং জেলির মতো একটা ভাব তৈরি করে পেটের ভিতর যা ক্ষুধা ও কিছুটা কমিয়ে দেয়। যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য এটা সত্যি অনেক কার্যকর। এছাড়া শরীরে অতিরিক্ত গরম ভাব, জ্বালাপোড়া এবং প্রস্রাবের সমস্যা কমাতেও তোকমা ও ইসবগুলের ভুসি অনেক উপকারি।
আরও পড়ুনঃ চুলে অলিভ অয়েল তেলের উপকারিতা - চুলে অলিভ অয়েল তেল ব্যবহারের নিয়ম
তোকমা ও ইসবগুলের ভুসি খাওয়া খুবই সহজ। তবে একসাথে বেশি খেয়ে ফেললে সমস্যা দেখা দিতে পারে। পেটে হালকা গ্যাস হতে পারে। তাই সব সময় পরিমাণ বুঝে খেতে হবে। সাধারণত সকালে খালি পেটে বা রাতে ঘুমানোর আগে হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে খেলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। মোটকথা, তোকমা আর ইসবগুল শরীরের ভেতরের ভারসাম্য রক্ষা করে এবং অনেকভাবে সাহায্য করে।
এই দুইটি একসাথে খাওয়ার নিয়ম ও সময়
তোকমা আর ইসুবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা অনেক, তবে যেভাবে খাচ্ছেন সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে এক চামচ তোকমা দানা ভিজিয়ে রাখলে সেটা ধীরে ধীরে ফুলে উঠে নরম হয়ে যায়। এই অবস্থায় সেটি খাওয়া সহজ হয়। এরপর আলাদা করে এক চামচ ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে দিলে আরো উপকার পাওয়া যায়। চাইলে সামান্য মধু যোগ করে নিতে পারেন। এতে স্বাদ আর পুষ্টিগুণ দুটোই বাড়ে।
এই মিশ্রণ খাওয়ার সেরা সময় হলো সকালে খালি পেটে অথবা রাতে ঘুমানোর আগে। সকালে খেলে পেট পরিষ্কার থাকে, হজম শক্তি বাড়ে এবং দিনটা শুরু হয় অনেক ভালোভাবে। রাতে খেলে পেট আরাম পায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি মিলে আর ঘুমটাও ভালো হয়। ওজন কমাইতে চাইলে খাওয়ার আধা ঘন্টা আগে খেলে তা ক্ষুধা কিছুটা কমিয়ে দিবে ফলে বেশি খাওয়ার ইচ্ছা কমে যাবে।
তবে সব কিছুরই একটা পরিমাণ থাকে। প্রতিদিন অতিরিক্ত খেলে উল্টা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই শুরুতে এক চামচ করে খাওয়া ভালো। সঙ্গে প্রচুর পানি খেতে হবে না হলে পেট ভারি বা পেটে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। আবার যদি কারো আগে থেকেই ডায়াবেটিস বা কিডনির সমস্যা থাকে তবে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াটা ভালো। নিয়ম মেনে চললে তোকমা ও ইসবগুল শরীরের অনেক উপকারে আসতে পারে।
ইসবগুলের ভুসি কতক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখে খাওয়া ভালো
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার আগে খুব বেশি সময় ভিজিয়ে রাখার দরকার হয় নেই। সাধারণত এক গ্লাস পানিতে ১ থেকে ২ চামচ ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে মাত্র দুই থেকে পাঁচ মিনিট রেখে দিলেই সেটা ফুলে ওঠে এবং খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। এই সময়ের মধ্যেই এটি একটি হালকা জেলের মতো আকার ধারণ করে যা পেটে গিয়ে সহজে খাবার হজম করতে সহায়তা করে।
তবে কেউ চাইলে আরো একটু নরম করতে পারে। ১০ মিনিট পর্যন্ত ভিজিয়ে রাখলে সেটি আরো নরম হয়ে যাবে। বিশেষ করে যাদের গ্যাস্ট্রিক বা হজমে বেশি সমস্যা থাকে তারা বেশি নরম করে খেতে পারেন। মনে রাখতে হবে, ইসবগুলের ভুসি পানি শোষণ করে জেলি তৈরি করে তাই এটি খাওয়ার পর প্রচুর পানি পান করা জরুরি না হলে পেট ভারী লাগতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি এটি সকালে খালি পেটে বা রাতে ঘুমানোর আগে খাওয়া যায়। এতে হজম ভালো হয় এবং পেটও পরিষ্কার থাকে। তবে একবারে বেশি খাওয়া যাবেনা, পরিমাণ বুঝে নিয়ম মেনে খেলে ফলাফল পাওয়া যাবে।
তোকমা দানা কতক্ষণ ভিজিয়ে রেখে খেতে হয়
ইসবগুলের ভুসির উপকারিতা কি কি
ইসবগুলের ভুসি আমাদের হজম শক্তি ঠিক রাখতে খুবই সাহায্য করে। বিশেষ করে যারা দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন, তাদের জন্য এটি একটি খুব ভালো সমাধান হিসেবে কাজ করে। ইসবগুল পেটে গিয়ে পানি শাসন করে ফুলে ওঠে এবং পেটকে নরম করে দেয়, ফলে মল সহজে বের হতে পারে। নিয়মিত খেলে পেট পরিষ্কার থাকে এবং হজম ভালো হয়।
এসিডিটি ও পেট জ্বালাপোড়া করা সমস্যাগুলো তেও ইসবগুল বেশ ভালো কাজ করে। ভারী খাবার খাওয়ার পরে অনেকের বুক জ্বালা বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়। ইসবগুল সেই সমস্যার সমাধান করে এবং পেটকে আরাম দেয়। এটি শরীরের অতিরিক্ত গরম লাগা কিছুটা কমিয়ে দেয়। বিশেষ করে গরমকালে যখন শরীর ক্লান্ত ও পানি শূন্যতা দেখা দেয়।
ইসবগুল প্রস্রাবের সমস্যার সমাধান করে। অনেকে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়াবা পাথর সমস্যায় ভোগেন। ইসবগুল শরীর থেকে টক্সিন বা ক্ষতিকর উপাদান বের করে দেয় এবং প্রস্রাব পরিষ্কার রাখে। এছাড়া এটি কিডনির উপরেও চাপ কমায় যেটা লম্বা সময়ের জন্য শরীর ভালো রাখতে অনেক সহায়তা করে।
ওজন কমাতে যাওয়া অনেকেই ইসবগুল খেয়ে উপকার পেয়েছেন। এটি শরীরে গিয়ে পানি শাসন করে ফুলে ওঠে যার ফলে পেট ভরা থাকে এবং অকারণে খিদে পায় না। যারা ডায়েট করছেন বা ওজন কমাতে চান বা কম খেতে চান তারা খাবারের আগে এটি খেলে খুদা কমে যাবে এবং পেট পরিষ্কার থাকবে। তবে মনে রাখতে হবে ইসবগুল খাওয়ার পর পরিমাণ মতো পানি খাওয়াটা অত্যন্ত জরুরি কারণ ইসবগুল পানি শোষণ করে তাই পরিমাণ মতো পানি খাওয়াটা জরুরী।
তোকমা দনার উপকারিতা কিভাবে আমাদের কাজে আসে
খালি পেটে তোকমা খেলে কি হয়
খালি পেটে ইসবগুল খেলে শরীরের কি ঘটে
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ইসবগুল কি ভাবে কাজে আসে
ইসবগুল একটি প্রাকৃতিক ভুসি যা আমাদের পাচনতন্ত্রের জন্য খুবই উপকারী। এটি মূলত নামক উদ্ভিদের বীজ থেকে তৈরি হয়। ইসবগুলের ভুষিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যা আমাদের পেটকে নরম করতে সাহায্য করে। এটি শরীরের ভেতরে পানি শোষণ করে এক ধরনের জেলির মতো আবরন তৈরি করে, ফলে মল নরম হয় এবং সহজে বেরিয়ে আসে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
আমি নিজেও আগে তেমন বুঝতাম না তোকমা আর ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার যে এত উপকার। কিন্তু যখন নিয়ম করে খাওয়া শুরু করলাম, তখন সত্যি শরীরে একটা হালকা ভাব টের পেলাম। আগে মাঝে মাঝে কোষ্ঠকাঠিন্য আর গ্যাস্ট্রিক নিয়ে ভুগতাম। এখন সকালে উঠে তোকমা খাই আর রাতে ঘুমানোর আগে ইসবগুল। একটা রুটিন হয়ে গেছে।
onek shundor information disen vai
Good information
You have given a very good information. Thank you so much. Keep it up.